Welcome



Corporate Sponsors

TriState Bulletin is thankful to Unicef and Nike for supporting Women's Empowerment. Voicing Unicef, actress Priyanka Chopra says, "I made myself irreplaceable." Nike encourages women ro do what they love to do, with Nike's corporate slogan,"Just do it."

In March, the month for Women Recognition
was Holi, 2024


This inredibly high resolution painting of Shree Krishna in his childhood is created by VishRaj Creation presenting the joy and colors of Holi.

Holi, dating back to the 4th century, is famous for the playful tossing of colored powders and water reflecting Spring. In Mathura and Vrindavan, thousands of Krishna devotees gather to play Holi reflecting eternal love of Radha and Shree Krishna.

Community Women Recognition

Keeping the community delighted, smiling and eating good food is what Mukta Majumdar believes in. TriState Bulletin recognizes Mukta Majumdar as a truly Community person, sharing nothing but Joy.

Sharing her Holi pictures, she told TriState Bulletin, "It was a very successful Holi this year, It Was a Super Duper hit this time with drinks like real bhaang, thandai and home made mouth-watering Holi Mithaas like Khaja, Gujiya, Malpoa, Mishti doi, Pitha, Phuchka, Jhallmoori, Alukabli and sumptuous food for main course."

Mukta said, "Seeing the success I have declared it as an annual event."

Holi 2024 : The Fun Pictures

History says, for more than 2000 years, Hindus celebrate Holi with bhang. It is a plant-based (cannabis) drink that causes intoxication and creates a sense of good feeling. Women in Edison, New Jersey included bhang in their Holi Special drinks and made it a "Super-Duper" hit celebration. .

Community Women Recognition
Creative Writing


Recognizing Moumon Mitra
A fascinating Writer of TriState Community
Fifteen Publications. Top Sales in Boi Mela, Kolkata.

Born in the IIT, Karagpur campus, where her father was a Civil Engineer. Moumon became a HR professional after graduation at ITC, Kolkata and then got married to Projit Mitra, an IT professional and migrated to US. Her writings began with deep realization of  restrictions imposed on women. Her first writing was on an Indian woman who fell in love with an American and the consequences. However, Moumon’s publications began with a series of poems which got publisher’s attention in Kolkata and on demand for novels, she proved herself to be a committed writer on human issues. 

All her books are available at Deys Publication, Ektara Prakashani, Boiwala Book Cafe, Kolikata Letterpress, Darabar Jayga. Also, available online in India as well as in College Street.

Moumon was recently honored at Saraswati Puja celebration organized by Sreeshti, NJ. Seen in the picture are Ranjita Chakrabarty and Anindita Chattopadhyay. Speaking on stage, Moumon talked about her publications and said, very emphatically, that she writes in Bengali and it is her dream to make every second generation in this country learn to speak, read and write Bengali.

Moumon Mitra can be reached on Facebook and also via TriState Bulletin Contact. 

All Moumon Mitra's books are available at Deys Publication, Ektara Prakashani, Boiwala Book Cafe, Kolikata Letterpress, and Darabar Jayga. Also, available online in India as well as in College Street. Contact Moumon Mitra at Facebook Link: facebook.com/moumonn.mitra


Recognizing Srabani Banerjee
Based in New Jersey, Srabani Banerjee writes consistently on Travelouges capturing voices of people, history, mythology and pictures taken by her at her global visits.

Srabani Banerjee's in-depth writing on Sundarbans is highly acclaimed by readers worldwide. Her writings published in TriState Bulletin include incredible captures of Argentina, Sicili and up-coming Travelogue on people, faces, history and philosophy of Greece, releasing in the next issue of TriState Bulletin.

Besides TriState Bulletin, Srabani Banerjee has huge fan followers at "Amader Chuti" - a Kolkata-based Online Travel magazine. Her published writings are in top publications like, Bartaman Magazine Prakriti, Ananda Bazar, Desh and also in New Jersey-based publication, Anandalipi.

On reader's request, we are publishing, once again, Srabani Banerjee's hillarious writing on Kolkata:
ফেলে আসা দিনগুলি  :
Pictorial input and Visualization: Sushmita Dutta

আমার এক দিদির কাছ থেকে সেদিন অনুরোধ এল আমি যেন আমাদের ছেলেবেলা সম্মন্ধে কিছু একটা লিখি। হইহই করে বলে উঠলাম ‘ও বাবা তাহলে তো স্মৃতির পর্দাখানা অনেকখানি সরিয়ে ফেলতে হবে গো’ তবুও একসময় অনুরোধ এড়াতে না পেরে কলম হাতে বসে পড়লাম। এখানে জনান্তিকে জানিয়ে রাখি আমি একটি আধা মফ:স্বলী জায়গায় বড় হয়েছিলাম। আজ সেই শহরতলিটি কলকাতা করপোরেশনের আওতায় পড়লেও আমার জেঠামশাই ধর্মতলায় গেলে বাড়িতে বলে যেতেন উনি কলকাতা যাচ্ছেন। সেযুগে ভালোমন্দ মিশিয়ে পাড়া বলে একটি দারুন শব্দ ছিল, সেখানে নিজের পাড়া তো বটেই মায় আশেপাশের পাড়ার লোকজনকেও সবাই চিনতো কারণ তারা বংশ পরম্পরায় একই বাড়িতে বাস করতেন। এখনকার মত অজানা বাইরের লোক বা ফ্ল্যাট বাড়ির ভিড় ছিল না। কে নিজের কাকা পিসি আর কেইবা পাড়ার সে বিশ্লেষণেও আমরা যেতাম না। তখনকার সাবেক কালের বাড়িতে দালান, বৈঠকখানা, ভেতরবাড়ি, ও তার উঠোনে তুলসিমঞ্চ মায় অনেক বাড়িতে গোয়াল ঘরও থাকত। আজকের মত লোকজনের আর্থিক স্বচ্ছলতা ছিল না, কিন্তু হঠাৎ করে দুপুরে কেউ এসে পড়লে তারা অত্যন্ত খুশি হয়েই নিজেদের ভাতের থালাটা এগিয়ে দিতেন। কোনও দূর সম্পর্কের আত্মীয়ও যদি কয়েকদিন থেকে চলে যেত আমরা ছোটরা চোখের জল মুছতে মুছতে জুতো লুকিয়ে একবার শেষ চেষ্টা করে দেখতাম যদি তার যাওয়াটাকে কোনোমতে ঠেকানো যায়। পাড়ার বড়দের পূর্ণ অধিকার ছিল আমাদের শাসন করার কারণ সেযুগে সবাই বিশ্বাস করতেন ‘It takes a village to raise a child’.

আমাদের ছোটবেলায় টেকনোলজির অবস্থা এতটাই করুন ছিল যে কোনও বাড়িতে একটি আধমনি ওজনের কালো ডায়াল ঘোরানো ফোন থাকলেই তারা বেশ গর্ব বোধ করত। আজ যেমন ফোনে গল্প করতে হলে আলাস্কা থেকে আন্দামান কয়েকবার আঙ্গুল ছোঁয়ানোর মামলা আর তখন বেহালা থেকে বেলেঘাটা কানেক্ট করতে হলে ডায়াল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে জনসাধারণ আঙ্গুলের চামড়া খসিয়ে ফেলতেন। তারপর যদিও বা অতি কষ্টে কেষ্টকে পেয়ে আপনি গগন কাঁপিয়ে পল্লীর নিদ্রা দূর করে ‘হ্যালো’ বল্লেন তখন দেখলেন ভালো করে কথা শেষ হবার আগেই মধ্যিখানে আর একজন ঢুকে পড়ে হুংকার ছাড়ছেন ‘বলি এবার ফোনটা একটু ছাড়বেন?আমারটা যে আরও আর্জেন্ট’ অর্থাৎ ক্রস্ কানেকশন্। তখন টেলিগ্রাম বা ট্রাঙ্কল আসাও ছিল এক সাংঘাতিক ব্যাপার কারণ সেটা এতটাই ব্যয়সাপেক্ষ ছিল যে লোকে ধরেই নিত তা কোন দূ:সংবাদ বহন করে আনছে। একবার পাড়ার একটি মেয়ে বাপের বাড়িতে এসে তার ছেলে দিল্লিতে থাকা বাবাকে কতটা মিস্ করছে জানাতে গিয়ে পয়সা বাঁচিয়ে ‘রাজ মিসিং ইউ’এর বদলে শুধু ‘রাজ মিসিং’ লিখে টেলিগ্রাম করে এলো, তার স্বামী পাগলের মত মাঝরাতে প্লেন ধরে এসে ছেলেকে ইন্টাক্ট দেখে যখন বউকে তেড়ে মারতে যায় তখন সেই সহৃদয় পাড়ার লোকেরাই মেয়েটিকে বাঁচায়।

ভাসা ভাসা মনে পড়ে আমরা যখন খুব ছোট, তখন দাদু একটি আধা আলমারি গোছের রেকর্ড প্লেয়ারএ মাঝে মাঝে মিস হরিমতির ‘শুখনো পাতার নূপুর পায়ে’ বাজাতেন, যদিও সেটি খুব সহজ ব্যাপার ছিল না। একটি বড় সাইজের হ্যান্ডেল বেশ কয়েকবার পাকিয়ে পিনটিকে রেকর্ডের ওপরে ছেড়ে দিলে তবেই মিস হরিমতি নাকী গলায় গেয়ে উঠতেন আর চোঙ্গয়ের কাছে কান দিয়ে আমরা আনন্দে হাততালি দিতাম। তারপর বাড়িতে এলো ফিয়েস্তা রেকর্ড প্লেয়ার। তখন রেকর্ডে একপিঠে একটা গানই বাজতো তাও আবার ছোটদের হাত দেবার অধিকার ছিল না পাছে ভেঙ্গে ফেলি। ঝামেলা হল যখন পাশের বাড়ির কাকু বোনাসএর টাকা পেয়ে একটি রেকর্ড প্লেয়ার ও একটি মাত্র রেকর্ড কিনে দিনেরাতে বেগম আখতারের ‘কোথা গেলো শ্যাম’ সারা পাড়া কাঁপিয়ে বাজাতে শুরু করলেন। অবশেষে এক পাড়াতুতো কাকা তিতিবিরক্ত হয়ে চেঁচিয়ে বল্লেন ‘বলি ও দাদা শ্যাম কোথায় গেলো একটু বলেই দিন না আর যে পারা যাচ্ছে না’।

যদিও তার অনেক আগে থেকেই সবার বাড়িতে রেডিও ছিল কিন্তু অনেকক্ষেত্রে তাদের অবস্থাও খুব সুবিধের ছিল না। আমাদের বাড়ির রেডিও ঘড়ঘড় করলে সবাই মাথায় চাঁটি মেরে তাকে সিধে রাস্তায় নিয়ে আসার চেষ্টা করত আর তিনি প্রায়শই রাস্তা ভুলে পুনরায় ঘড়ঘড় করতে থাকতেন। আমরা অবশ্য এই ধরনের রেডিওতেই শুনতাম সঙ্গীত শিক্ষার আসর, গল্প দাদুর আসর, বোরোলীনের সংসার, অনুরোধের আসর ইত্যাদি। খবর বলার জন্য ছিলেন ইভা নাগ, নীলিমা সান্যাল ও দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যয়রা যাদের চেহারা কোনদিন না দেখলেও তারা হয়ে গিয়েছিলেন আমাদের নিতান্তই কাছের মানুষ। ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগান খেলার দিন তো কোনও কথাই নেই। রাস্তার মোড়ের চায়ের দোকানে রেডিওর সামনে জটলা করে জনসাধারণ শুনে চলেছেন -- এগিয়ে চলেছেন এগিয়ে চলেছেন তারপরেই সমস্বরে ‘গোল’ বলে এক পিলে চমকানো চিৎকার। একবার দেখি পাড়ার দুটো কুকুর লালু আর কালু তারাও মুখটিকে উর্দ্ধপানে তুলে একযোগে গলা মিলিয়ে ‘গোল’ বলার চেষ্টা করছে, উপহার স্বরূপ তাদেরকেও একটা করে নেড়ে বিসকুট দেওয়া হল। আমাদের জানাশোনা এক মোহনবাগানের সাপোর্টার মাঠে গিয়ে ভুল করে ইস্টবেঙ্গল ফ্যানেদের দলে বসেছিল একটু উসখুস করতেই একজন ‘কোথা থেকে ছারপোকার গন্ধ আসছে রে?’ বলে তেড়ে উঠতেই তার সব উদ্দীপনা বন্ধ হয়ে যায়। শুনেছিলাম একজনরা তাদের তিনটি রেডিওর তিনটি নামকরণ করেছিলেন---- প্রথমটি ‘আমি কান পেতে রই’ অর্থাৎ তার ওপর ডিরেক্টলি কান না পাতলে কিছুই শোনা যেত না, দ্বিতীয়টি ‘তুমি রবে নীরবে’ অর্থাৎ তিনি হঠাৎ করেই বোবা হয়ে যেতেন আবার আচমকাই নিজের বাক্শক্তি ফিরে পেতেন, আর তৃতীয়টি ‘বজ্রে তোমার বাজে বাঁশি’ কারণ তিনি হেড অফিসের বড়বাবুর মত দিব্যি খোশ মেজাজেই থাকতেন কিন্তু মাঝে মধ্যে ক্ষেপে গিয়ে সারা পাড়া কাঁপিয়ে নিজের অস্তিত্ত জানিয়ে দিতেন।

আমাদের শহরতলিতে সেসময় যৌথ পরিবারের অভাব ছিল না। আমার বাবা পরে আলাদা বাড়ি করে চলে এলেও সেটি পুরোনো বসতবাড়ির এতটাই কাছে ছিল যে যাতায়াতটা কোন ব্যাপারই ছিল না। একবার আমাদের পাড়ায় এক অবাঙ্গালী ক্রিকেটর একটি নার্সারি স্কুল খুলে বসলেন। কিছুদিন পরেই তিনি বাবাকে বল্লেন ‘আপনাদের তল্লাটে লোকজনের বড্ড বেশি ছেলেপুলে হয় যাকেই জিজ্ঞাসা করি বলে ভাইবোনের সংখ্যা এক ডজনেরও বেশি’। অগত্যা বাবা তাকে বোঝালেন গণনাতে তুতো ভাইবোনরাও সব ঢুকে পড়েছে কারণ বাড়িতে বাচ্চারা অনেকেই নিজের মা, জেঠিমা ও কাকীমা দের যথাক্রমে বড়মা, মেজমা সেজমা, ছোটমা ইত্যাদি বলে সম্বোধন করে আর তাদের ঠাকুমা সম্প্রদায় পঞ্চাশোর্দ্ধ ছেলেদেরকেও বড় খোকা, মেজ খোকা, সেজ খোকা বলে ডাকেন, তাই এই বিপর্যয়। আজ ভাবতে অবাক লাগে সেযুগে যৌথ পরিবারে লোকসংখ্যা যাই হোক না কেন বেশীরভাগ বাড়িতেই বাথরুমের সংখ্যা ছিল একটি। আমার মার যখন বিয়ে হয় তখন বাচ্ছা বুড়ো ও কাজের লোক নিয়ে বাড়ির জনসংখা ছিল তিরিশোর্দ্ধ, কিন্তু বাথরুম ছিল একটি। তাই সেযুগে এই ব্যাপারে টাইম ম্যানেজমেন্ট নি:সন্দেহে প্রশংসার দাবী রাখে। একজন বুঝিয়েছিলো তাদের বাড়ির বাথরুমের ডালডার টিনে নাকি টাইমার ফিট করা থাকে অর্থাৎ মরচে ধরে টিনের তলায় অজস্র ফুটো, তাই জল ভর্তি করে দৌড়লেও বাথরুমে থাকার ডিউরেশন নাকি মিনিট খানেকের বেশি স্থায়ী হয় না।

সে যুগে বাচ্ছা বুড়ো কারুরই জামাকাপড়ের বিশেষ ঘটা ছিল না। যৌথ পরিবারে যেখানে অনেকগুলি ভাইবোন পরপর সাজানো থাকত তাদের অবস্থা ছিল আরও সঙ্গীন। একদা নতুন অবস্থায় যে জামাটি বাড়িতে প্রবেশ করত সেটি ধাপে ধাপে গা বদল হয়ে প্রায় বিবর্ণ অবস্থায় শেষেরটির গায়ে উঠত। গরমকালে খুব ছোটো ছেলেগুলোকে কোমরে একটি ঘুনসি লাগিয়ে উলঙ্গ করেই ছেড়ে দেওয়া হতো, একবার এক পাড়াতুতো ভাই কোমরের ওটাকে পয়সা মনে করে তার বিনিময়ে আমার কাছে লজেন্স চেয়েছিলো। ঠাকুমা সম্প্রদায় বাড়িতে কাজল পেতে কাজললতা থেকে সবার চোখে আচ্ছা করে কাজল লাগিয়ে দিতেন তাতে নাকি চোখ ভালো থাকে। খুব ছোট ছেলেগুলোর কপালে ও সাইডেও লাগানো হতো প্রমাণ সাইজের একটি কাজলের টিপ যাতে নজর না লাগে। দশের নীচে বহু ছেলে মেয়েদেরকেই ভবিষ্যতে ভালো চুল গজাবে আশ্বাস দিয়ে গরমকালে মাথা মুড়িয়ে ছেড়ে দেওয়া হতো আর ঘামাচি এড়ানোর জন্য ভূতের মতো গায়ে ছড়িয়ে দেওয়া হতো নাইসিল পাউডার। কিশোরী মেয়েদের মাথায় শালিমার মার্কা নারকেল তেল জবজবে করে লাগিয়ে মা জেঠিমার দল বিকেলে চুলটিকে আচ্ছা করে পেছন দিকে টেনে বেঁধে দিতেন আর কারুর বা মাথায় শোভা পেত বেরাবিনুনি। শীতকালে লাগানো হতো মুখে বোরোলীন আর হাতেপায়ে গ্লিসারিন। তখন অবিবাহিতা মেয়েদের সাজগোজকে অনেকেই ভালো চোখে দেখতেন না, লিপ্স্টিক তো দূরের থাক অনেক বাড়িতে ফেস পাউডারও থাকতো না তারা বডি পাউডার দিয়েই কাজ সারতেন। আধুনিক যুগে যেমন মেকআপ আর বিউটি পার্লারএর জোরে কুরূপারাও সুরূপা হয়ে বেরিয়ে আসেন তখন ছিল ঠিক তার উল্টো। সুরূপারাও যখন মাথায় তেল দিয়ে টাইট করে চুল বেঁধে বিনা মেকআপ্এ অত্যন্ত সাদাসিধে পোশাকে দেখা দিতেন, তখন তাদেরও গ্লামারাস কিছু দেখতে লাগতো না। আশ্চর্যের ব্যাপার সবার কাছে এসব এতটাই স্বাভাবিক ছিল যে আমরা নিজেদেরকে কেউ অভাগা বলে মনে করি নি। গরম কালে বাচ্ছা মেয়েদের গায়ে থাকত সাদা টেপ ফ্রক তাতে অনেকসময় মা কাকীমারা বুকে পালতোলা নৌকো, হাতী ইত্যাদি এমব্রডারি করে দিতেন আর বাচ্ছা ছেলেগুলো হাফপ্যান্ট পরে খালি গায়েই ঘাটে মাঠে কাদাতে ফুটবল খেলে বেড়াতো বা চাকা চালাতো। এছাড়া ডাংগুলি, লাট্টু, ঘুড়ি বা ইঁট দিয়ে উইকেট বানিয়ে ক্রিকেট খেলা তো ছিলই, আমি অবশ্য মেয়ে হয়েও সেই দলেই পড়তাম। একটু বড় মেয়েরা কাবাডি, খোখো, এক্কাদোক্কা, কিৎকিৎ এসব খেলা নিয়েই থাকত আর খুব ছোটোরা বিরক্ত করলে তাদের দুধেভাতে করে ‘তুই ব্যাটা ডিব্বা চোর’ ইত্যাদি বলে ক্ষেপিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হতো। বাড়ি গিয়ে নালিশ করলে বালিশ পাবি বা পরে দেখবি তোর কি হাল হয় সেগুলোও বলে দিতে ভুলতাম না। যদিও সে যুগে মায়েরা ছেলেমেয়ের হয়ে কথা বলতে যেতেন না নিজেদেরকেই মিটিয়ে নিতে বলতেন। আমাদের কারুরই বিশেষ খেলনা ছিল না যদিও খেলার লোক ঢের ছিল।

একবার ঠাকুমার বাড়ির পাশে ইলুর মেম পুতুলের হেঁটে বেড়ানো দেখে হাঁ হয়ে গিয়েছিলাম কারন তখন বেশিরভাগ মেয়েদের ন্যাকড়ার বা মেলা থেকে আনা প্লাস্টিক ও কাঁচের পুতুলই সম্বল ছিল। বাটার জুতোর বাক্সগুলি তাদের বাসস্থান হিসাবে ব্যাবহার হত, তাই বহুদিন পর্যন্ত আমার ধারণা ছিল বাটা বোধহয় টাটারই মতো কোনো ভারতীয় নাগরিক। ছোট মেয়েরা ইকিরমিকির, আগডুমবাগডুম আর নয়তো বা ছোট ছোট হাতা খুন্তি নিয়ে রান্নাবাটি খেলতো আর মাঝেমধ্যেই পুতুলের বিয়ে দিত। আমার এক দিদির ন্যাকড়ার ছেলের সাথে ইলুর মেম মেয়ের বিয়ে হল, যদিও সেটা একেবারেই সঠিক ম্যাচ নয়, তবুও দুই বেয়ানের এই বিয়েতে সম্মতি ছিল। ঝামেলা বাঁধলো যখন বিয়ের পর আমার দিদি তার মেম ছেলের বউকে বগলদাবা করে তার নিজের বাড়ির দিকে হাঁটা দিলো আর সাফ জানিয়ে দিলো বিয়ের পর মেয়েদের স্থান শ্বশুর বাড়িতেই বাপের বাড়িতে নয়। বলাবাহুল্য ইলু তার মেয়ের বিয়ের এই ভয়াবহ পরিণতি আশা করে নি তাই তৎক্ষণাৎ সে দিদির চুলের মুঠি ধরে পিঠে ঘা কতক বসিয়ে তার মেম মেয়েকে উদ্ধার করে ঘরে চলে গেল। একই দিনে বিয়ে ও ডিভোর্স দুটি সারা হলেও আমরা ছোটরা সেদিন কেউ জলযোগ থেকে বঞ্চিত হইনি। ছোটবেলায় ইংরাজী সিনেমা চার্লি চ্যাপলিন ও হাটারী দেখলেও আমাদের মনে সব থেকে ছাপ ফেলেছিল গ্লোবে দেখা ‘সাউন্ড অফ মিউজিক’। যদিও তখন আমার বয়েস বছর পাঁচেকের বেশি ছিল না তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়েও আমরা ওয়াকিবহাল ছিলাম না কিন্তু সিনেমার গানগুলো সবার মুখে মুখে ফিরত। সেবছর পূজোতে সাউন্ড অফ মিউজিকের জামা পড়ে সারেগামাপাধানি ভুলে ছোটরা সবাই ডোরেমিফাসোলাটি গাইতেই ব্যস্ত ছিলাম। মহালয়ার দিন সেই ভোর চারটেয় উঠে রেডিওতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলায় চণ্ডী পাঠ শোনার পর থেকেই শুরু হতো আমাদের দিন গোনার পালা। তখন রেডিওতে সনত সিংহের ‘একেক্কে এক দুএক্কে দুই’ গানটা শুনলে আমাদেরও আর লেখাপড়ায় মন বসতো না। পাড়ার ঠাকুর বাড়ির কাছেই তৈরী হতো আর আমরা ছোটরা সেই একটু একটু করে ঠাকুর গড়া দেখতাম আর বাড়িতে বসে গানের কথাগুলির মতনই ভাবতাম – ‘কে জানে এবার বোধহয় সিংহরাজের কেশর দিলো জুড়ে, অসুর বোধহয় বেরিয়ে গেছে মোষের পেটটি ফুঁড়ে’।

সেযুগে বেশীরভাগ বাড়ির খাওয়াদাওয়াই ছিল অত্যন্ত সাধারণ। নমাসে ছমাসে কিছু চপ কাটলেট ছাড়া আর কোনও রেষ্টুরেন্টের মুখ দেখেছি বলে মনে পড়ে না। জোর করে বাচ্ছাদের নিমপাতা, নিমের ঝোল, উচ্ছে করলা এসব বসন্ত এড়ানোর জন্য খাইয়ে দেওয়া হতো, না বলার উপায় ছিল না। বিরিয়ানী নামক যে একটি পদার্থ আছে তাও আমরা জানতাম না বড়জোর এক আধবার পোলাউ। যৌথ পরিবারে ছোট বাচ্ছাদের আলাদা থালাও অনেকক্ষেত্রে জুটতো না, এক একটি ব্যাটেলিয়ান ঠাকুমা জেঠিমাদের ঘিরে বসে যেত আর তেনারা--- কে আগে খায়, কাগা খায় না বগা খায় ইতাদি বলে সেমি সলিড মণ্ডগুলো পেটে চালান করে দিতেন। হাঁসের ডিম বাড়িতে সুতো দিয়ে আধখানা করে কেটে বাচ্ছাদের ডালনা করে দেওয়া হতো কারণ অনেকে বাড়িতে মুরগির ডিম ঢোকাতেন না। রবিবার দুপুরগুলো ছিল পাঁঠার মাংস খাওয়ার দিন। বাড়ির কর্তারা রবিবারের বাজারে ঘুম থেকে দেরীতে উঠতেন তাই রবিবারে সকালের জলখাবার গরম সিঙ্গাড়া আর জিলিপি দিয়ে সারা হতো। তারপর দুপুরে যথানিয়মে সবার পাতে পড়ে যেত দুটুকরো মাংস আর একটি প্রমাণ সাইজের আলু। চেয়ে চিন্তে যে এক আধ পয়সা যা পেতাম তা তোলা থাকত অপথ্য কুপথ্য খাবার জন্য।

বাইরে গেলে রসগোল্লা আর নমাসে ছমাসে একটি ছোটো কোয়ালিটি আইসক্রিম বা ক্যাডবেরি ছাড়া বড়রা আর কিছুই কিনে দিতেন না। ফুটপাথের বরফ আইসক্রিম সম্মন্ধে বলা হত সেগুলি নাকি নর্দমার জল দিয়ে তৈরী আর ফুচকাওয়ালার হাত ও তাদের হাইজিন নিয়ে যা বলতো তা একেবারেই কহতব্য নয়। তবুও আমরা সেই অখাদ্যগুলোই বেশি আনন্দ করে খেতাম। বুনো ছোটো লাল কুলের ওপর কয়লার গুঁড়র মত কালো কারেন্ট ছড়িয়ে কার জীভ কতটা কালো হল তার প্রতিযোগিতা চলত। এছাড়াও হাঁড়ি মাথায় ফেরিওয়ালারা জয়নগরের মোয়া, চিঁড়েরচাক, শোনপাপড়ি, চন্দ্রপুলি ও কুকিবিসকুট নিয়ে আসত। গরমকালের বিকেলে বেলফুলের মালা ও কুলফি বিক্রেতার দলও চলে আসতো আর সাপুড়ের বাজনা শুনে তালে তালে সাপের নাচ দেখে আনন্দে আমরা বাচ্ছারা হাততালি দিতাম। হায়!তখন কি আর জানতাম সাপেরা একেবারেই বদ্ধ কালা। দূর থেকে ডুগডুগির আওয়াজ কানে এলেই বুঝতাম রামদাস আর গোলাপীরা চলে এসেছে। থিম যদিও একটাই, লাল ওড়না গায়ে দিয়ে রাস্তা থেকে তোলা ধুলোর পাউডার গালে ঘষে গোলাপী রাগ করে বাপের বাড়ি চলে যাচ্ছে আর বাঁদর রামদাস বউয়ের মান ভাঙ্গাতে পিছুপিছু যাচ্ছে। এটাকে যদিও খুব উচ্চমানের ড্রামা বলা যায় না তবুও বাচ্ছারা প্রতিবার এই একই নাটক দেখে হেসে গড়িয়ে পড়ত। তখন বাড়ির ছাদে মেয়েরা বড়ি ও বিভিন্ন রকমের আচার রোদে দিতো আর আমরা ছোটরা কখনো চোর আর কখনো বা কাকতাড়ুয়ার রোল নিতাম। চারিদিকে ছিল অজস্র পুকুড় আর ধারে ধারে কত গাছ। নারকেল সুপুরী ছাড়াও আম, আমড়া, জামরুল, পেয়ারা কত যে গাছে উঠে পেড়ে খেতাম তার ইয়ত্তা নেই। আজ অবশ্য তা স্মৃতিতেই স্থান পেয়েছে কারণ সেসব বহুদিনই আগেই উধাও হয়ে সেখানে জায়গা করে নিয়েছে অজস্র ফ্ল্যাট বাড়ির দল।

তখন পাড়ার সরস্বতী পূজোয় বাচ্ছারাও মেতে উঠতো। পূজোর দিন ভোরবেলা লোকের বাড়ির ফুল চুরি করা ছাড়াও তাদেরকে চাঁদা সংগ্রহের কাজে লাগানো হত। ছোটদের নিষ্পাপ মুখের দিকে তাকিয়ে অনেকেই না বলতে পারতেন না, যদিও আমার স্কুল টিচার মা ছিলেন তার ব্যতিক্রম। চাঁদা চাইতে এলেই কে কোন ক্লাসে পড়ে জেনে নিয়ে নিষ্ঠুর ভাবে তাদেরকে বানান জিজ্ঞাসা করতেন আর না পারলে তাদের সরস্বতী সংক্রান্ত কোন ব্যাপারে থাকার অধিকার নেই বলে খেদিয়ে দিতেন। একবার আমাদের এক আত্মীয়কে দেখতে একটু দূরের পাড়ায় মার সাথে গিয়েছিলাম, একটা বছর চোদ্দর ছেলেকে খাতা হাতে এগিয়ে আসতে দেখেই পেছন থেকে একজন সাবধান করে দিলো ‘ওরে যাসনি রে এক্ষুনি বানান জিজ্ঞাসা করবে’। মার রেপুটেশন্ এত দূরে চলে এসেছে দেখে সেদিন চমৎকৃত হয়ে গিয়েছিলাম। ছেলেটি বন্ধুদের উপদেশ উপেক্ষা করে যখন এগিয়ে এল, মা ছেলেটি ক্লাস টেনে পড়ে জেনে নিয়ে বল্লেন ‘লেফটনেন্ট বানান বল’। ছেলেটি বার দুয়েক lef lef বলে পেছনে হটে দলবল সমেত পগার পার হয়ে গেল।

সে সময়ে পালাপার্বনে পাড়াঘরে মিষ্টি বিতোরণএর একটা চল ছিল তাতে গজা, নিমকি সবই থাকতো আর তাতে একআধবার দুর্ঘটনাও ঘটত। একবার আমার জেঠু উত্তর কলকাতার একটি দোকান থেকে প্রচুর পরিমাণে সাংঘাতিক গোলাপী রংএর গজা নিয়ে এলেন তাই সেগুলিকেও অন্যান্য মিষ্টির সাথে দোলের দিন পাড়ায় বিতরণ করা হল। কিছুক্ষণএর মধ্যেই বাড়ি বদল হতে হতে গজাটি পাড়ার আর এক কাকিমার হাত ধরে পুনরায় আমাদের বাড়িতেই ফিরে এল। তৎক্ষণাৎ আমার জ্যাড়তুতো দিদি চিল্লিয়ে উঠে বললো ‘ও ঠাকুমা দেখে যাও আমাদের গোলাপী গজাটা আবার ফিরে এসেছে’। বলাবাহুল্য, পাড়ার কাকিমা বাড়িতে প্রচুর কাজ ফেলে রেখে এসেছেন বলে আর এক মুহূর্তও দাঁড়াতে রাজি হলেন না। পাড়াতে কেউ গয়ায় পিন্ডি দিতে গেলেও আমরা অত্যন্ত উৎসুক ভাবে অপেক্ষা করতাম কখন তারা এক চাঙ্গারি ক্ষীরের প্যারা নিয়ে বাড়িতে ঢুকবে।

ফেলে আসা দিনগুলি continued

শহরতলিতে লোকজন তখন পাহাড় বলতে দার্জিলিং আর সমুদ্র বলতে পুরীকেই বুঝতো। বড় বড় কালো ট্রাঙ্ক গোছানো আর হোন্ডল পাকানো দেখেই বাচ্ছারা আনন্দে লাফাতে থাকতো। সেই সবাই মিলে হৈহৈ করে ট্রেনে চেপে যাওয়া আর বড় ডিব্বা থেকে লুচি তরকারি আর রসগোল্লা বার করে খাওয়ার স্মৃতি আজও বড় মধুর। ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা রথের মেলা থেকে বাঁশি, হার, চুড়ি, খেলনা কিনে আর প্রচুর পাপড় ভাজা খেয়ে তবেই বাড়ি ঢুকত। হাঁ করে পুতুল নাচ দেখতে দেখতে অবাক হয়ে আমরা ছোটরা ভাবতাম রামচন্দ্রর কত ক্ষমতা যে তার একটা পায়ের ছোঁয়াতেই পাষাণ অহল্যা জেগে ওঠে। চড়কের মেলাতে বাঁশের ওপরে লোকগুলোকে ওভাবে বোঁ বোঁ ঘুরতে দেখে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যেত তবুও আনন্দ পেতাম তেমনই গাজনের দিন শিব পার্বতীদের দেখে ছুটে যেতাম। সব যুগেই দুষ্টু ছেলেপুলে ছিলো তবে বেশি বাঁদরামি করলে বা নষ্টচন্দ্রের দিন কুকীর্তি করে হাতেনাতে ধরা পড়লে পাড়ার গার্জেন কাকা দাদারাও কান মলে চড়চাপ্পড় কষিয়ে দিতেন। তারাও সেটাকে অন্যায় প্রাপ্য বলে মনে করতো না কারণ সেযুগে অনেক ছেলেপুলের কাছেই রবীন্দ্রনাথের ভাষায় -- জল ও স্থল ভাগের ন্যায় পৃথিবীটা আহার ও প্রহারেই বিভক্ত ছিল।

সবার বাড়ি থেকেই শেখানো হতো কখনো চেয়ে চেয়ে খেতে নেই তাহলে লোকে হ্যাংলা বলে। আমার মিষ্টি প্রীতির কথা কোথাও অবিদিত ছিল না তাই কারুর বাড়িতে পিঠে পায়েস হলে আমার জন্য তোলা থাকতো চেয়ে খেতে হতো না। একবার আমার পাঁচ বছরের তুতো ভাইকে নিয়ে বাদাম ভাজা কিনে ফিরছি দেখলাম পাড়ার এক কাকিমা রান্নাঘরে জানলার ধারে বসে লুচি ভাজছেন। ভাই বাইরে থেকেই বলল ‘কাকিমা লুচি ভাজছো? মা বলেছে চেয়ে চেয়ে খেতে নেই’। অগত্যা তিনি আমাকে আলুর তরকারিতে নুন ঠিক হয়েছে কিনা পরখ করতে ভেতরে ডাকলেন আর নেহাৎ লুচির সাথে না খেলে নুনের তারতম্যটা বোঝা যায় না তাই দুজনের পাতেই কয়েকটি লুচি আর নলেন গুড় ঢেলে দিলেন। আমাদের ছোটবেলায় কারুর বাড়িতে একটা গাড়ি থাকলেই তাদেরকে বড়লোক বলে গণ্য করা হতো আর সেই সুবাদে বাবার এক বন্ধুর বাড়িতে একই গল্পের বই বার দশেক পাল্টিয়ে সদলবলে গিয়ে রাজভোগ খেয়ে আসতাম। আমার এক জ্ঞাতি ভাই তার মাকে সকালে নারকেল কোড়াতে বা প্রচুর দুধ ফোটাতে দেখলে এসে বলে যেত আমি যেন বিকেলে তার বাবা মার একটু খোঁজখবর নিতে যাই। না: আমরা কেউ লোভী ছিলাম না।

তখন পাড়ায় কারুর বিয়ে হলে সবাই সেটাকে নিজেদের বাড়ির অনুষ্ঠান বলেই ধরে নিত আর আশেপাশের বাড়িতেও দিন দুয়েক রান্না হতো না। বিয়েতে কনের নিজের ও তার তুতো ভাইবোনদের বন্ধুরাও নিমন্ত্রিত হত। টোপর মাথায় দিয়ে বর আসছে দেখাটাও ছিল এক দারুন ব্যাপার। আমরা সর্বক্ষণ নতুন জামাইকে ঘিরে বসে থাকতাম কারণ অচিরেই তিনি হয়ে উঠতেন সারা পাড়ারই আদরের জামাই। বিয়ের পর এক জামাই আমাদের তল্লাটের একটি বিখ্যাত মিষ্টির দোকানে অফিসের সহকর্মীকে নিয়ে কচুরী মিষ্টি খেয়ে দাম চোকাতে গিয়ে শুনল ‘আরে রাম রাম জামাইয়ের কাছ থেকে আবার দাম নেবো কি’? সহকর্মীটি তাজ্জব হয়ে জিজ্ঞাসা করেছিল -- তুমি কি সবারই জামাই নাকি হে?। ছোটবেলায় শহরতলীতে ক্যাটারার চোখেও দেখিনি তখন বাড়িতেই রান্না হতো। ভিয়েনের সময় আমরা হাঁ করে মিষ্টি বানানো দেখতাম। দূরের আত্মীয়রা কেউ রাতে ফিরতেন না তাই পরের দিন দুপুরেও খাবার ব্যবস্থা থাকতো। আগের দিনের বাঁচা রস থেকে বোঁদে তৈরী হতো আর আমরা ছোটরা সকালের জলখাবার হিসাবে বোঁদে মুড়ি খেতাম। পাড়ার ছেলেরা সবাই কোমরে গামছা দিয়ে পরিবেশণে নেমে যেতো আর বাচ্ছাদের দেওয়া হতো নুন লেবু দেওয়ার ভার, তবে তারাও গামছা না পেলে কান্নাকাটি জুড়ে দিতো।

কলাপাতা ছিল বিয়ে বাড়ির এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। শোনা যায় তিন বছর বয়সে আমি একটি ট্রাই সাইকেলের বিনিময়ে আমার দাদুকে বিয়ে করতে রাজি হই কিন্তু বিয়েতে কলাপাতা না থাকায় শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে আসি। এছাড়াও ছিল কম্পিটিশন করে খাওয়া। তবে অনেকক্ষেত্রেই তারা নিজেদের পাতে দিতে না বলে পাশের জনের পাতে মাছ রাজভোগগুলো ঢেলে দিতে বলতেন। বলাবাহুল্য সেগুলি ওনাদের পাতেও বর্ষিত হতো। কেউ কেউ আবার হাতের পাতা দুটো সামনে মেলে মধ্যে যথেষ্ট জায়গা রেখে দু সাইডে সরাতে সরাতে তাদের খাওয়ার অক্ষমতার কথা জানাতেন, কিন্তু মধ্যিখানের ফাঁকফোকড় দিয়ে পাতে পড়ে গেলে ওনারা অপারগ হয়েই পুরোটা খেতে বাধ্য হতেন। একবার আমিও কম্পিটিশন্ করে গোটা দশেক রাজভোগ খেয়ে এসেছিলাম, বাবা শুনে গম্ভীর মুখে বলেছিলেন ‘মা না খেয়ে মরতে সময় লাগে সত্তর দিন আর খেয়ে মরতে কিন্তু একদিন তাই ভবিষ্যতে কথাটা একটু মনে রেখো’।

সেযুগে সুন্দরীর ডেফিনেশন্ ছিল ‘গোরা সর্বহরা’ আর আমার মত শ্যাম বর্ণের মেয়েরা পড়ত সর্বহারার দলে। তখন পাড়ার বয়স্কা দিদারা অনেকেই নিজেদের বৈতরণী পারের চিন্তায় মন না দিয়ে পাড়ার কালো মেযেগুলোকে কিভাবে পার করবেন সেই চিন্তাতেই বিভোর থাকতেন। একবার এক দিদা আমার সামনেই মাকে বল্লেন ‘বলি অ বৌমা তোমার মেয়ে তো ঠিক গৌর বন্ন নয় গো, তাই কাল থেকে গায়ে কাঁচা হলুদ লাগাতে শুরু করো আর কয়েকটা রবি ঠাকুরের গান শিখিয়ে দাও, বলি পার করতে হবে তো’। শয়নে স্বপনে, সুখেদু;খে, আপদেবিপদে রবীন্দ্রনাথ ছাড়া বাঙালিদের পাশে আর কেইবা আছেন। স্নানঘর থেকে বাসর ঘর সবেতেই তার দান অসামান্য। প্রথমদিকে তিনটে গান শিখলেই কিছুটা কাজ চলে যেত, দেখতে আসা হবু পাত্র ও তার বাবা মার জন্য গোটা দুয়েক রবীন্দ্রসংগীত আর বাড়িতে ঠাকুমা শাশুড়ি বিদ্যমান থাকলে তার জন্য একটি ভক্তিমূলক। পাড়ায় একজন দক্ষিণীর টিচার ছিলেন যখন তার বাড়ি থেকে সমবেত কন্ঠে ‘আলো আমার আলো ওগো’ রব উঠত তখন সবাই ধরে নিত এরা একেবারেই বিগিনার আর যারা আমার মত কয়েক ধাপ ওপরে বিচরণ করত তাদের সাথে সঙ্গদ করার জন্য সপ্তাহে একদিন তবলচি নিয়োগ করা হতো। বাড়ির কাছেই বড়লোকের এক সুন্দরী মেয়ে তার তবলচির সাথে পালাতে মা আর রিস্ক না নিয়ে একটি বুড়ো তায় অন্ধ তবলচি যোগাড় করে আনলেন।বলাবাহুল্য পাড়াঘরে তার অত্যন্ত হাই ডিমান্ড ছিল আর সেই কারণে তার মেজাজও ছিল তিরিক্ষি। আমাদের বাড়ির কুকুর ব্রাউনসোনা খুব পান খেতে ভালোবাসতো, একদিন ওনাকে ডিবে থেকে পান বার করতে দেখে লোভ সামলাতে না পেরে টুক করে হাত থেকে তুলে নিলো আর উনি আমাকেই দোষী ঠাউরে যাতা বলতে লাগলেন। তিনি নাকি আমার সব কার্যকলাপেরই খবর রাখেন, যে মেয়ে ব্যাটা ছেলেদের মত গাছে চড়ে আর পাড়ায় ছেলেদের সাথে ডাংগুলি খেলে বেড়ায় তার কাছ থেকে এর বেশি কিছু আশা করা যায় না বলে সেদিনই তিনি কাজে ইস্তফা দিয়ে চলে গেলেন।

সেসময় পাড়ায় পাড়ায় রবীন্দ্রজয়ন্তীর খুব ঘটা ছিল। পাড়ার বাচ্ছা মেয়েরা তখন দলবেঁধে নাচতো আর তালের সাথে পা মেলানোটাই ছিলো তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। যে কথাগুলি রবীন্দ্রনাথ তার কষ্ট কল্পনাতেও লেখার কথা ভাবতে পারেন নি সেরকম একআধটা কথা ঢুকে গেলেও তাদের নাচ প্র্যাক্টিসে কোনও ব্যাঘাত ঘটতো না। একবার দেখি একটা বাচ্ছা মেয়ে আপনমনে গান গেয়ে নেচে যাচ্ছে -- ‘আয় তবে সহচরী, হাতেহাতে ধরি ধরি, নাচিবি ভি. ভি. গিরি, গাহিবি গান’। সেসময় শীতকালে পাড়ার পাড়ায় দেখা যেত মধ্যান্যভোজন সাঙ্গ হলে বৌদিদিদের দল উল কাঁটা নিয়ে রোদে পিঠ ঠেকিয়ে দিব্যি গল্প করতে করতে সোয়েটার বুনে চলেছেন আর কারুর বা হাতে শোভা পেত সিনেমা জগতের ম্যাগাজিন। তারা পা দুটিকে সামনে মেলে হেসে হেসে তাদের হিরো উত্তম কুমার কি করলো সেই আলোচনাতেই মগ্ন থাকতেন, কাউকে বা আবার দেখা যেত দল ছাড়া হয়ে এক মনে গোগ্রাসে গিলে চলেছেন বিমল মিত্রের ইয়া মোটা বই ‘সাহেব বিবি গোলাম’। সেই আসরে ছোটরা তো দূরের থাক অবিবাহিতা মেয়েদের ঢোকাও নিষিদ্ধ ছিল। অনেকে আবার গর্ব সহকারে তাদের স্বামীদের রাতে বাড়ি না ফেরার কথা ঘোষণা করতেন কারণ সেযুগে কার স্বামী অফিসে কতবার ঘেরাও হয়েছেন তার ওপর স্বামীদের পজিশন ও প্রেস্টীজ নির্ভর করত।

শহরতলিতে তখন অনেকেই স্থানীয় বাংলা স্কুলে পড়তো আর যা ছিল অনেকটাই মুখস্থ ভিত্তিক। তখন আজকের মত মহামান্য গুগল টিচার ছিলেন না যে কম্পিউটার খুলে ভুলটা সংশোধন করে নেওয়া যেত। ইতিহাসের অবস্থা ছিল খুবই করুন, আগাপাছা না জেনে প্রথম পাণিপথের যুদ্ধ থেকে সিপাহী বিদ্রোহ, সবারই সাল তারিখ বাচ্ছারা কন্ঠস্থ করতো। পৃথিবীটা গোল জানা থাকলেও কেউ গ্লোব ঘুরিয়ে দেখার প্রয়োজন মনে করত না তাই দেওয়ালে টাঙ্গানো বিশাল ম্যাপে আমাদের সামনে সেটি সমতল আকারেই ধরা দিত। একদিন দেখি একজন পাশের মেয়েটিকে বলছে ‘প্রশান্ত মহাসাগর তো একটাই জানতাম রে কিন্তু দ্যাখ ম্যাপের বাঁ ডান দুদিকেই দেখাচ্ছে’। আমার স্বামী বাংলা মাধ্যম হলেও খুব নামকরা স্কুল থেকে পাস করেছিলেন, কিন্তু একবার জিজ্ঞাসা করাতে বল্লেন স্কুল থেকে নাকি এমন মুখস্ত করিয়েছিলো যে এতবছর পরেও শেফিল্ড ছুরি কাঁচির জন্য বিখ্যাত বা ওসাকা জাহাজ নির্মাণের জন্য বিখ্যাত তিনি ভোলেন নি। ওনাদের হোস্টেলে নাকি একজন কম্বল মুড়ি দিয়ে আলাদা আলাদা করে মুঘল সম্রাটদের তালিকা মুখস্থ করতে গিয়ে সিকোয়েন্স ভুলে পরীক্ষায় আকবরের পুত্র বাবর লিখে এসেছিল। আমাদের পাড়ায় একজন ‘জার্নি বাই বোট’ ইংরাজী রচনা মুখস্থ করে পরীক্ষায় ‘জার্নি বাই ট্রেন’ দেখে ঘাবড়ে গিয়ে বোটএর বদলে ট্রেন বসিয়ে চলে এলো। শোনা যায় সেই ট্রেন নদীর ওপর দিয়ে চলতে চলতে একসময় নাকি ডকে এসে থামে। গণিতে কেশব নাগের গুঁতো খেয়ে অনেকেরই নম্বর তৈলাক্ত বাঁশের বানরের মত ওপর নীচে ওঠানামা করতো, তাই ভরসা রাখতে না পেরে তারা জ্যামিতি ঝাড়া মুখস্থ করে পাশের তিরিশ নম্বর তুলে নিতো আর আমিও সেই দলেরই একজন ছিলাম। শুনেছিলাম হোমওয়ার্কএ গরুর রচনায় পাড়ার যমজ ভাইয়ের লেখা হুবহু এক হওয়াতে কানে মোচড় খেয়ে একজন বলেছিল ‘কি করব স্যার বাড়িতে তো ওই একটাই গরু তাই সব এক হয়ে গেছে’। বাড়ি থেকে শিখিয়ে দেওয়া হতো কেউ যেন পরীক্ষায় ফাঁকা খাতা রেখে না আসে কারণ ফাঁকাতে নম্বর দেওয়া সম্ভব নয়। একদিন দেখি আমার পাশে বসা মেয়েটি বিপরীতার্থক শব্দে সদন্তর উল্টো বিদন্ত ভুলে গিয়ে জায়গাটা ফাঁকা না রেখে বড় বড় করে ফোকলা লিখলো। সেই মেয়েটিকেই একবার উত্তমের উল্টো অধম না লিখে ‘সুচিত্রা’ লেখায় তাকে ক্লাস থেকে বার করে দেওয়া হয়। সে যুগে কিশোরী মেয়েদের সিনেমার বই পড়া ছিলো এক বিরাট অপরাধ। একবার মাসীর কাছ থেকে নবকল্লোল এনে লুকিয়ে পড়েছিলাম আর সেই এফেক্টে ক্লাসে ভারতবর্ষ প্রবন্ধের লেখক ‘এস ওয়াসেদ আলী’ ভুলে গিয়ে ‘ওয়াহিদা রহমান’ লিখে এলাম। দুটো নামের প্রারম্ভেই ‘ওয়া’ থাকায় গুলিয়ে গিয়েছিল। মা একটি প্রবল চপোটাঘাত করে বলেছিলেন আমি বিগড়ে গেছি সেটা নাকি উনি অনেক আগেই আঁচ করছিলেন কিন্তু এই ঘটনার পর ওনারা আর পাড়ায় মুখ দেখাতে পারবেন না। সেযুগের মানুষ কামিনী রায় এর কবিতা ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ সেই থিওরিতেই বিশ্বাসী ছিলেন।

সে জমানায় শহরতলিতে মশা, চোর আর বেড়াল এই তিনটির বড় উপদ্রব ছিল। মশারা স্তম্ভের আকারে আমাদের কালো মাথাগুলি টার্গেট করে ঘুরতো আর গান গাইবার সময়ে দু একটা সবার পেটেও ঢুকে যেতো। পাশের বাড়ির দুটি বেড়াল বশিষ্ঠ ও বিশ্বামিত্র তাদের সেই মহান নামের তোয়াক্কা না রেখে সারা পাড়ায় যথেচ্ছাচার চুরি করে বেড়াতো কিন্তু কিছু বলার উপায় ছিল না কারণ সে জমানায় অতীব চোর বেড়ালদেরও মা ষষ্ঠীর বাহন হিসাবে দেখা হতো। একদিন শুনি নিতু রেগে গিয়ে তার ঠাকুমাকে বলছে রোজ রাতে ওনার বারবার মশারী খুলে কলঘরে যাবার জন্য মশারা বিছানায় ঢুকে তার বেড়ালদের কামড়াচ্ছে ফলে রাতে তাদের অত্যন্ত ঘুমের ডিসটার্ব হচ্ছে। শোনা যায় নিতুর বিয়ের পর তার শ্বশুর শ্বাশুড়ি নাকি বলেছিলেন তাদের বেড়াল জ্ঞানে যত্ন করতে। একবার আমার খুড়তুতো বোন ঠাকুমার সাথে শুতে রিফিউজ করলো কারণ সে নাকি গভীর রাতে ঠাকুমাকে সামনের দাওয়ায় বসে চোরের সাথে গল্প করতে শুনেছে। তিনি নাকি চোরকে তার ছেলেপুলে কটি, বাড়িতে আর কে কে আছে, সে কোথায় কাজ করে এসব জিজ্ঞাসা করছিলেন। শুনেছিলাম বহুবছর আগে বাড়িতে চোর ঢুকেছিল, জেঠিমা ভয় পেয়ে আমার বাবার ঘরের দরজা ধাক্কিয়ে বলেছিলেন ‘ঠাকুরপো তাড়াতাড়ি ওঠো চোর এসেছে’ আর বাবা তার উত্তরে বলেছিলেন ‘বসতে বলো’। একবার আমাদের নতুন বাড়িতেও চোর ঢোকে, বাবা দেখি সকালে চিৎকার করে বলছেন ‘বাসনগুলো নিলি নিলি ঠিক আছে তাই বলে বাথরুম থেকে জবাকুসুমের শিশিটাও হাওয়া করে দিলি? চোর বলে কি কোনও ক্লাস্ থাকতে নেই’? জেঠুর এক বন্ধুর বাড়িতে চোর নতুন ফ্রিজের মোটর চুরি করতে ঢোকায় বাড়ির বৃদ্ধ বুলডগ খুব বেশি ঝামলায় না গিয়ে আলতো করে চোরের কাঁধে একটি হাত ঠেকায় আর চোর ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে সেই বীভৎস জিভ বার করা মূর্তিটিকে দেখে ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে তার পিতৃদত্ত নাম ভুলে দরজা ধাক্কে বলে ‘বাবু উঠুন আমি চোর’।

এইভাবেই যখন একটু বড় হলাম তখন বাড়িতে এল টেলিভিশন। তখন মাত্র কয়েকটি বাড়ির ছাদেই আন্টেনা শোভা পেতো আর টিভি ছিল সাদাকালো তাও আবার একটি মাত্র চ্যানেল। প্রথমদিনে ‘হরকরকমবা’ দেখেই আনন্দে সবাই লাফিয়ে উঠেছিলাম কিন্তু মুশকিল বাঁধলো শনি রবিবারের সন্ধ্যাগুলিকে নিয়ে। দলে দলে লোক বাড়ির ছাদে আন্টেনা দেখে সিনেমা দেখতে ঢুকতে শুরু করলো আর মেয়েদের চা বিসকুট সার্ভ করতে করতে তাদেরই সিনেমা দেখা মাথায় উঠলো। একে তো সাদা কালো অস্পষ্ট ছবি তাতে আবার ক্রিকেট খেলা দেখতে গিয়ে দেখা যেতো অনেকসময় গাভাস্কার তথা আরও অনেকের মাথার ডগাটি জাতীয় পতাকার মত ফড়ফড় করে উড়ে চলেছে। পেছন থেকে ইন্সট্রাক্শন আসতো ‘ওরে কাছে গিয়ে একটু অ্যাডজাস্ট করে দ্যাখ্ না রে যদি মাথাগুলো একটু ঠিক হয়’। অনেকসময় কাছে গেলেই ছবি ঠিক হয়ে যেত আর সবাই সমস্বরে বলে উঠতো ‘এইতো এবার একেবারে পাক্কা হয়েছে তুই ঠিক ওইভাবেই সাইড করে দাঁড়িয়ে থাক্ একদম নড়বি না এখন তোর বডিটাই আন্টেনার কাজ করছে’। তবে বেশীক্ষন এই দুর্ভোগ পোহাতে হতো না কারণ দুম করেই লোডশেডিং হয়ে যেতো আর পেছন থেকে হতাশার রব উঠতো -- ‘যা: জ্যোতি বাবু চলে গেলেন'। অচিরেই পাড়ায় একটি দেয়াল লিখন চোখে পড়ল,

এইভাবেই ধীরে ধীরে শেষ হয়ে গেলো আমাদের ছেলেবেলার এক অধ্যায়। একদা গাছপালায় ভরা যে শহরতলির ঘাটে মাঠে আমরা খেলে বেড়াতাম আজ সেখানে জায়গা করে নিয়েছে সারি সারি আবাসন। পুরোনো বসতবাড়িগুলি ভেঙ্গে সে জায়গায় আজ দাঁড়িয়ে আছে নতুন নতুন বাড়ি আর সেখানে বাস করে সব নতুন মানুষ। একসময় পাড়া নামক যে শব্দটা ছিল আজ তা চিরতরে হারিয়ে গেছে। বাবা কাকারা বেপাড়ার মানুষদেরও চিনতেন আর এখন পাশাপাশি ফ্ল্যাটে বাস করেও কেউ কারুর খবর রাখে না। পৃথিবী পরিবর্তনশীল আর হয়তো সেটাই স্বাভাবিক। আমার দাদু যিনি কোনদিন প্নেনেই চাপেন নি তিনি আজ বেঁচে থাকলে দেখতেন মানুষ এখন মঙ্গল গ্রহে যাবার চিন্তা করছে আর যখন বারবার হাতল ঘুরিয়ে মিস্ হরিমতির একটি গান শুনতেন আজ তিনি অতি অনায়াসে একটি ছোট ফ্লাশ ড্রাইভে হাজারখানেক গান শুনে নিতে পারতেন। আজ সবার জীবনে স্বচ্ছলতা এসেছে, বাচ্ছারা আর কেউ আমাদের মত একটা ক্যাডবেরি একটু একটু করে ভেঙ্গে দুদিন ধরে খায় না। আজ সবার কাছেই কত দামী দামী খেলনা তবুও মনে হয় তারা আজ বড় একা। পড়াশুনার চাপে কারুরই আর খেলার সময় নেই, এখন বাচ্ছাদের দেখলে রবীন্দ্রনাথের তোতাকাহিনীর কথাই মনে পড়ে। সেই মাঠে ঘাটে সবাই মিলে খেলে বেড়ানো, একসাথে মুড়ি মেখে খাওয়া মায় দুষ্টুমি করলে পাড়ার কাকা জ্যাঠাদের কাছে বকুনি খাওয়া আজ সবই কেমন যেন স্বপ্ন বলে মনে হয়। পা ছুঁয়ে প্রণাম করার মানুষগুলি তো একে একে প্রায় সবাই সেই ঠিকানাবিহীন দেশেই বিচরণ করছেন আর আমরাও যতদিন না সেই পথের পথিক হচ্ছি তারা আমাদের জন্য ফেলে রেখে গেছেন ছোটবেলার কিছু মধুর স্মৃতি।

Full of humour, Srabani Banerjee is an excellent writer. Besides TriState Bulletin, she has huge fan followers at "Amader Chuti" - a Kolkata-based Online Travel magazine. Her published writings are in top publications like, Bartaman Magazine Prakriti, Ananda Bazar, Desh and also in New Jersey-based publication, Anandalipi.

Srabani Banerjee is New Jersey-based.
She can be reached at: s[email protected]

Community Women Recognition
Mitushi Banerjee


Recognizing Mitushi Banerjee
With her team members at SBA (Somerset Bengali Association), Mitushi delivered SBA's consistently high-standard community service with love and respect for community members.

SBA's Saraswati Puja in 2024 had the highest number of attendees - 700+, in the entire TriState and Mitushi gives credit to SBA's team members especially Suchismita Bagchi and Dipanwita Das for dedicated community service.

Closing the bulletin with Kolkata-based
Star Sreetama Baidya

Play Video

Production Team at TriState Bulletin and TriState Glamour

Sushmita Dutta,
Creative Head 



Corporate Sponsors

We are thankful to UNICEF and NIKE for supporting Women’s Empowerment. Voicing UNICEF’s statement, Actress Priyanka Chopra says, “I made myself irreplaceable .” What a sense of pride, and taking the ownership of being a woman with conviction and dignity.
We have covered few other successful Bengali immigrants. Enjoy!     
– 
Sushmita Dutta, CEO, TriState Bulletin and Glamour 

Well known Bengali woman with Global Recognition

Jhumpa Lahiri the internationally known author was living in the Tri-State Community, in Brooklyn, New York. She now moved to Rome with her husband Alberto Vourvoulias, a journalist, and two kids Octavio and Noor. Daughter of immigrants from West Bengal, India, Jhumpa Lahiri was born in London. She was three years old when her family moved to the United States. Her father, Amar Lahiri worked as a librarian at the University of Rhode Island. Her mother wanted her children to learn Bengali heritage and culture, so the family often visited Kolkata.

What was behind her decision to go to Rome?
Talking to Vogue, Jhumpa Lahiri said,

“I write a lot about people who leave one place behind and go to another—that’s been my work from the beginning—but I personally never really experienced that. I came to the U.S. when I was two years old, and while I’ve observed close at hand what it means to be an immigrant, I’ve never had to get to know another country in which I clearly don’t belong and to speak in a second language and to do all of those things that my characters do and that my parents did and that my husband, Alberto, has done. I felt that there was something missing. I convinced him to quit his job and off we went. And it’s been the most incredible year of my life”. 

Nilanjana Sudeshna "Jhumpa" Lahiri

An American author, internationally known for her short stories, novels, and essays in English and now in Italian. She has been a professor of creative writing at Princeton University, New Jersey since 2015. Her notable works include Interpreter of Maladies (1999), The Namesake (2003), Unaccustomed Earth (2008), The Lowland (2013). Her list of awards includes O. Henry Award, 1999, and Pulitzer Prize for Fiction in 2000. Interpreter of Maladies (1999) a collection of short stories won the Pulitzer Prize for Fiction and also the PEN/Hemingway Award. The Namesake (2003), her first novel, was adapted into a film. Unaccustomed Earth (2008), another book on a collection of stories won the Frank O’Connor International Short Story Award. The Lowland (2013), was a finalist for the Man Booker Prize and also the National Book Award for Fiction. In her works, Jhumpa Lahiri wrote about the Indian-immigrant experience in America. She also owns the National Humanities Medal.

Recent Press Release

Princeton University Press announced that Lahiri’s ‘Translating Myself and Others’ will come out next spring. Lahiri has lived off and on in Rome for nearly a decade, and her translation projects include ‘The Penguin Book of Italian Short Stories’ and her novel ‘Whereabouts’, which she first wrote in Italian.Sep 14, 2021

Jhumpa Lahiri: Formal Education and Awards

 She graduated from South Kingstown High School and received her B.A. in English literature from Barnard College of Columbia University in 1989. She then received multiple degrees from Boston University: an M.A. in English, an M.F.A. in Creative Writing, an M.A. in Comparative Literature, and a Ph.D. in Renaissance Studies.
Lahiri’s fiction includes the Pulitzer-winning story collection ‘The Interpreter of Maladies’ and the novels ‘The Namesake’ and ‘Unaccustomed Earth’. Since 2019, she has directed Princeton’s creative writing programme.

Play Video


Elora Mukherjee
Jerome L. Greene Clinical Professor of Law.
Director, Columbia Law School’s Immigrants’ Rights Clinic Recognition

Elora Mukherjee is a globally recognized advocate, practitioner,
and voice for immigrants, asylum seekers. 
She sparked national and international outrage as she gave extensive media interviews. 
She was invited to testify before Congress, and she argued federal policies as unlawful.

Clinical Professor of Law at Columbia Law School

As a professor, she has no patience for procrastinators. Despite her gentle demeanor and easy laugh, she’s a taskmaster with students. “I have no tolerance for missed deadlines,” says the Jerome L. Greene Clinical Professor of Law and director of Columbia Law School’s Immigrants’ Rights Clinic. In a single semester, she expects each of her students to oversee every detail of an asylum or deportation case, from the initial client interview to its adjudication or trial. “Our clients’ lives are on the line, and I can’t let the quality of our work suffer because a student isn’t pulling her or his weight.”

A $15 million gift from the Jerome L. Greene Foundation

  Mukherjee’s groundbreaking work led to her being named the Jerome L. Greene Clinical Professor of Law, a new endowed chair made possible as part of a $15 million gift in 2017 from the Jerome L. Greene Foundation, a longtime supporter of the Law School. “The Jerome L. Greene Foundation has been a champion of the Law School’s clinical work from day one and it is an absolute honor to hold the inaugural Greene chair,” says Mukherjee. Her clinic is representing individual asylum seekers in New York and New Jersey, working to support the sanctuary movement in the city, assisting detained refugee children and mothers near the Texas border, and they are supporting refugees in Tijuana.  

She sparked National and International outrage

 Just a year ago, in 2019, EloraMukherjee’s firsthand reports of the inhumane conditions of confinement for children in a U.S. border detention station sparked national and international outrage as she gave extensivemedia interviews on what she had witnessed.She was invited to testify before Congress, where she detailed for the House Committee on Oversight and Reform how children in border detention centers were sick, dirty, frightened, separated from family members, and held as victims of federal policies that she argued were unconstitutional, unlawful, ineffective, and un-American.

Recognized at USDA 2023 Celebrating Women's History month


Dr. Rubella Sanyal Goswami
Woman with Academic Excellence.
National Program Leader at
The U.S. Department of Agriculture

Rubella Sanyal Goswami, frequently reaching out to the entire Tri-State Community with musical and dance shows, has had a highly successful career trajectory over the past two decades, working in the fields of science & technology research, education, and policy. She holds the unique distinction of being employed in all of the three major sectors in her field – academia, corporate, and Government.

Rubella holds an undergraduate degree with distinction and gold medal from Banaras Hindu University (BHU), and a Master’s from the University of Nottingham, UK. Subsequently, Rubella moved to the US in the year 2000, to further her academic career, and earned her Doctoral degree from the Univ. of Minnesota. She thereafter began her professional career as a tenure track faculty, assumed responsibilities including guiding MS and Ph.D. students, teaching, and leading a team of researchers conducting extramurally funded research.
She has numerous publications and awards to her credit
and is sought after as an expert in her field.

Subsequent to her faculty position, Rubella was offered a position as a Principal Investigator in Global R&D for the Fortune 500 company Dupont Inc., where she conducted groundbreaking research. The US States Department of Agriculture (USDA) offered Rubella a position in Washington D.C, where she initially served as a National Program Leader, directing multimillion-dollar extramural funding programs with USDA’s National Institute for Food and Agriculture, and then moved into the position of Chief for the Plant Pests and Protectants Branch with USDA’s Biotechnology Regulatory Service. Currently, she serves in a critical senior leadership role as the Assistant Director for the National Identification Services with USDA’s Animal and Plant Health Inspection Service.
In community services, Rubella was instrumental in the creation of the Indian cultural team “Srishti” in Minneapolis, MN in 2002 and “Nobina” in Delaware, in 2014.
Over the past decade, Rubella has played a key role in directing several projects revolving around Indian arts and culture and hosted many stage shows in different parts of the US. She is very active in the community and loves bringing people together. During the pandemic, in addition to her role as a part of the Executive Committee for the Bengali Association of Delaware Valley, she has been independently involved in organizing and participating in over thirty musical and informational shows associated with COVID relief and other philanthropic causes. Reflecting on her life in the US, Rubella feels that perseverance, hard work, and willingness to take up new challenges have been the key to her success.
Her motto has been to meet life head-on with a smile!!!


Dr. Bhaswati Bhattacharya
Dividing her time between Manhattan and Benaras
in search of better medicine for humans.
A documentary film on her work, was shown on
The Discovery Channel.

At her dedicated website, drbhaswati.com, she has two visualizations, one on learning – a path through the forest and another on consultaion, pictured as a non-attached lotus. She is creative and uniquely different. 
Dr. Bhaswati Bhattacharya is a Harvard-educated, licensed, board certified holistic physician trained in family medicine and preventive medicine, dividing her time between Manhattan and Benaras. She is also a published scientist trained in pharmacology, neuroscience and Ayurveda, an awarded educator, and a best-selling author. Her work through The DINacharya Institute focuses on bringing the wisdom and science of authentic traditional medicines, such as Ayurveda, back to the hands and hearts of the people. Since 2003, she has Clinical Assistant Professor of Family Medicine in the Department of Medicine at Weill Cornell Medical College in New York. She has recently completed a PhD in Ayurvedic chemistry, pharmaceutics, and pharmacology (Rasa Shastra & Bhaisajya Kalpana) from Banaras Hindu University, focusing on polyherbal formulations for diabetes. These contributions are commendable. 

Her book “Everyday Ayurveda” is a national bestseller published by Penguin Random House. 
Dr Bhattacharya was recently awarded as a Fulbright Specialist 2018-2021 in Global Public Health specializing in Integrative Medicine.


Dr. Bharati Bandyopadhyay
TriState Bengali MD with Service Excellence. Received Certificate of Appreciation from the White House.

Bharati was interviewed by WNPV Lansdale radio station on pediatric issues and broadcasted live on 1440 AM. Bharati's office address: 2031 North Broad Street, Suite 145 Lansdale, Pa 19446. Phone: 215-368-1114

Bharati Bandyopadhyay was educated in India and came to this country as an immigrant. She thinks that she was reborn professionally in this country after rigorous training in medicine. At this time, she met well-known doctors in her field. After training, she joined Dr. Felix Scherzinger’s practice, which is well-known in the local area. She practiced medicine with a lot of empathy, and she became popular among the patients of the local area. Her name spreads outside the local area and she used to examine the patients of outside areas with a lot of empathy. She became a member of Abington Jefferson Hospital. During her practice, she was involved with several patients with complex diseases. She collaborated with well-known doctors in the field and resolved the issues. She received the certificate of appreciation from the White House for providing the service in the local area. She used to gain knowledge by participating in professional conferences and talked to well-known doctors. She was selected as “best doctor” by Philadelphia magazine 2017, 2018, 2019, and 2020. In spite of her busy life she led a local group to perform bone-marrow drive from Asian communities for helping cancer patients. Recently she is helping patients regarding Covid-19.


Dr. Shamita Das Dasgupta
On Global Platform, Fighting Violence Against Women

১,১০০ রৌপ্যমুদ্রার বিনিময়ে ডিলাইলা নিজের প্রেমিকের শক্তির উৎস যে তাঁর লম্বা চুল, সেই তথ্যটি দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দিয়েই ক্ষান্ত হলেন না, ঘুমন্ত প্রেমিকের চুল ছেঁটে তাঁকে ক্লীবে পরিণত করলেন। নিঃসন্দেহে ডিলাইলা সে যুগের এক সফল মহিলা গুপ্তচর…Link

Shamita Das Dasgupta, Professor, Writer, and Cofounder of Manavi, an organization with a mission to end all forms of violence against women. In her work with sex workers in India, she witnessed bravery and efforts 
with which the mothers try to keep their children safe and get them away from the environment of sex work. In February 1985, six South Asian women from various backgrounds established Manavi (meaning “primal woman” in Sanskrit) in New Jersey. The founders’ original intention was to create a strong voice for women and a psychological, intellectual, emotional, and activist space for women in the South Asian American community. However, as soon as the organization was established, South Asian women’s needs directed and shaped Manavi’s work on anti-violence against women advocacy.

Manavi is the first organization in the U.S. to concentrate on violence against women in the South Asian community.

Manavi’s methods of work are derived from women’s needs and demands.
Since its inception, Manavi has provided linguistically specific and culturally appropriate individualized assistance to battered women of South Asian descent. In 1997, Manavi established Ashiana, a temporary residential facility for South Asian victims of violence who need a safe home. Simultaneously, Manavi has dedicated serious efforts to raise consciousness in the community about woman abuse and challenge systems that are responsible for sustaining violence against South Asian women. Shamita Das Dasgupta says, “My achievements are not many. In fact, I am deeply humbled by women who decide to end violence in their lives and fight for justice. I am inspired by their courage. And I am overwhelmed by South Asian women’s capacity to care for others. Even when faced with severe violence, they nurture their siblings, parents, children, relatives, and even the abuser. I am astounded by women’s ability to repair their injuries and forgive”. 
Working with Manavi has deeply transformed Shamita Das Dasgupta.
She says, “Personally, I have learned from the struggles and activism of women in many countries including South Asia. In my work with sex workers in India, I witnessed the tremendous bravery and efforts with which the mothers try to keep their children safe and get them away from the environment of sex work. They work hard to get their children an education, which they believe would secure a positive future for them. These women’s efforts to make a better life for their children have profoundly touched me. It is astonishing what women do to live in safety 
and dignity. And they deserve no less.” Shamita Das Dasgupta taught at Rutgers University and NYU, written a bunch of academic papers and books.


Dr. Arundhati Sanyal
Woman with Academic Excellence
Published on Oscar Wilde, Yeats, and Tagore

Arundhati Sanyal, Senior Faculty Associate in the English Department at Seton Hall University and Director, Writing Center at the university. Her outstanding Dissertation is on Women’s Writing and Feminist Literature. She has published on Oscar Wilde, Yeats, and Tagore, as well as on Writing Center pedagogy. Her community work is inspired by her husband Tapas Sanyal’s leadership roles in The Garden State Cultural Association (GSCA, NJ) and other organizations.

Arundhati Sanyal came to the United States as a graduate student after her marriage to Tapas Sanyal. A student at Presidency College and Calcutta University where she stood first in her Bachelor of Arts, she pursued a MA degree at Rutgers University of New Jersey and then went on to complete her doctoral studies in The Graduate Center, the City University of New York where she wrote a dissertation on George Eliot’s novels for which she received “Adrienne Aulander Munich Prize for an Outstanding Dissertation Concerned With Women’s Writing and Feminist Literature” (2001). Her research interests include Nineteenth-century studies, Post-colonial literature, and Composition studies with a specific focus on Writing Center pedagogy. She has taught at Rutgers, Brooklyn Polytechnic Institute, Middlesex County College, Rider University, and Seton Hall University for the past thirty years.

At present, she is a Senior Faculty Associate in the English Department at Seton Hall University and Director, Writing Center at the university. She teaches writing, nineteenth-century British literature, theory, philosophy, and religious studies in the English department, the University Core, and the Honors program. In 2018 she received the President’s Award for Student Services at Seton Hall University.

Arundhati’s community work is inspired by her husband Tapas’ active involvement with and work for the community through his membership and leadership functions in Garden State Cultural Association (GSCA, NJ). She has worked with this organization by helping organize community and cultural events. She has also helped organize and present fund-raisers for organizations such as Bharat Sebashram Sangha and Dakshineshwar Ramkrishna Adya Sangha (DRSA). She has participated in efforts to raise money and support for local food kitchens like Elijah’s Kitchen, New Brunswick, NJ. Her work has also included editing of the community magazine of GSCA, “Spandan” which has now evolved into a full-scale online magazine through the efforts of younger generations of editors. She has actively participated in NABC cultural events as a participant in singing, chanting, and narrating including her well-received program on Tagore – “Shatakanthe Rabindranath”. Her work within the community is ongoing and ever-evolving and one of the most precious blessings of her experience in the diaspora.


Dr. Indrani Kodali
Ph.D. in Computational Physics and Technology Leader at a
Leading Telecom company

Indrani is originally from New Delhi and brought up around the world (Europe, Northern Africa, and the US), Her goal in life has always been to do well and empower the next generation kids to attain the best education. After attaining her Ph.D. in computational physics, Indrani pursued a postdoc at the University of Pennsylvania and shortly after joined the telecom industry in the R&D sector.

Indrani worked and raised her family of three kids in New Jersey, along with her husband who is also a leader in technology. Her kids have since grown and pursuing higher studies and also working. Indrani spends her time after work voluntarily on college consulting with high schoolers. For the past 15 years or so Indrani also works with children from varied socio economic backgrounds to encourage them to go to college and excel. Some of the children Indrani helped under her college consultancy went on to go to the best universities in the nation. Indrani’s hobbies include singing, dancing, cooking and working with high school kids. One of her favorite quotes is “if we want to reach real peace in the world, we should start educating children”- Mahatma Gandhi.


Dr. Pallavi Guha
Author of
Hear #MeToo in India News, Social Media,
and Anti-Rape and Sexual Harassment Activism

When Sushmita said Tristate Bulletin is doing a series on joy of successful women, I was very grateful to be a part of the series. Joyee in Bengali means a Winner; for me, joyee are all the women who constantly strive to support family, friends and others, despite challenges in life. They uplift other women and never hesitate to share their spotlight. Sushmita Dutt is the first joyee that comes to my mind, relentlessly using her creativity, volunteering, and time to support women to keep their ‘chin-up’ and help moving ahead. 

And when she told me to write about the journey of my book Hear #Metoo in India and joyee, I thought of all sexual assault survivors, victims, and activists who keep on moving ahead who keep fighting for the victims and survivors of sexual assault. Joyee, for me, is Sutapa, Kavita, and others who may not be known to others, but their selfless diligence and compassion make them joyee. It was gratifying and cathartic experience for me to know the joyees and their journey through my book.

Please grab a copy. The book is selling worldwide both in-store and online:
B&N, Amazon, Rutgers University Press, UBC Press, and Amazon India.

যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে…
True, in any field of life it is hard to find a companion, someone who will be a support, offer love and be a pillar you can lean on. I faced lot of hardship when I planned to write the book. The biggest battle I had to fight was breaking social norms – “Don’t visit someone who has been sexually harassed”. But, my determination and love for the work kept me going and today I feel I have given the best thing a battered woman needs – Pride! And thanks to Sushmita Dutta, an incredible woman, for a bulletin on “Women Power”. 


Editor's Note:

Publishing Success Stories of women, we felt proud presenting incredible “Woman Power”.
To include names that we may have missed, 
Please write to: [email protected]   [email protected]

Production Team at TriState Bulletin and TriState Glamour

Sushmita Dutta,
Creative Head